শাহারাস্তিতে ছেলে ছাত্রদলের রাজনীতি করায়, স্বীকৃতি মেলেনি মুক্তিযোদ্ধা বাবার



মো: নুরুল ইসলাম, শাহরাস্তি উপজেলার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, যিনি চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার বানিয়াচোঁ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন,  নুরুল ইসলামের পিতা মৃত ইদ্রিস মিয়া এবং মাতা মৃত আরবের নেছা।এবিএম পলাশ তার বাবার দীর্ঘ সংগ্রাম ও নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বাবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার যন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন।


মো: নুরুল ইসলাম ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত আনসার বাহিনীতে ট্রেইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর, ১৯৭১ সালের জুন মাসে হাতিমারা ক্যাম্প থেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। তিনি কুমিল্লার আফজাল খানের অধীনে ছিলেন, যেখানে শাহরাস্তির মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রুহুল আমিন এবং ইউনিয়ন কমান্ডার মোঃ আবু তাহেরের সার্টিফিকেশনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পান।


২০০৪ সালে মো: নুরুল ইসলামের নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও, পরবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই স্বীকৃতি বাতিল করা হয়। ২০১৭ সালে পুনরায় সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হলেও, অজানা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার প্রাপ্য স্বীকৃতি পাননি।


এবিএম পলাশ গভীর বেদনার সাথে বলেন, তার বাবার বঞ্চনা তার ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণেই হয়েছে। পলাশ তার বাবার চেহারায় দেখেছেন অসীম কষ্ট ও বঞ্চনার ছাপ, যেখানে তার বাবা প্রায়ই বলতেন, "কেন তুই ছাত্রদলের রাজনীতি করোস? তোর কারণে আজকে আমি সকল কিছু থেকে বঞ্চিত।" পলাশ নিজেকে এই অবস্থার জন্য অপরাধী মনে করেন এবং মনে করেন, যদি তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকতেন, তবে হয়তো তার বাবার সমস্ত প্রাপ্য সন্মান সহজেই নিশ্চিত হতো।


এবিএম পলাশ আরও অভিযোগ করেন, দেশে হাজারো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সুবিধা ভোগ করছেন, অথচ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা আজও তাদের প্রাপ্য সন্মান থেকে বঞ্চিত। তার বাবার সমস্ত ডকুমেন্ট থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই।


তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান ও সনদ প্রদান করা হোক এবং যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।


পরিশেষে এবিএম পলাশ আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন, যেন তার বাবা মো: নুরুল ইসলামসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করা হয়।