|
ছবি: সংগ্রহীত |
শাহরাস্তিতে ভুল চিকিৎসার কারণে এক প্রসূতির মর্মান্তিক মৃত্যু! ঘটনাটি ঘটে শাহরাস্তির মেহের কালীবাড়ি এলাকার শাহরাস্তি পপুলার হাসপাতালে। গত ১৭ জুলাই এক প্রসূতি নারীকে তার স্বজনরা অসুস্থ অবস্থায় এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, রোগীর সিজার অপারেশন করতে হবে। যদিও শুরুতে রোগীর স্বজনরা সিজার করতে আপত্তি জানান, কিন্তু চিকিৎসকদের আশ্বাসে তারা অবশেষে অপারেশনের জন্য সম্মতি দেন।
সিজার অপারেশনের পর প্রসূতিকে কয়েকদিন হাসপাতালে রাখা হয় এবং পরে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ছাড়পত্র পাওয়ার পরও প্রসূতি তার পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। প্রথমে স্বজনরা ধরে নেন যে, সিজার জন্য ব্যথা হচ্ছে এবং এটি স্বাভাবিক। তবে ব্যথার তীব্রতা ক্রমেই বাড়তে থাকে, যা স্বজনদেরকে চিন্তিত করে তোলে। এরপর প্রসূতির স্বজনরা তাকে কুমিল্লায় কুছাতলী মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর জানা যায় যে, সিজার অপারেশন সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়নি এবং এই কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কুছাতলী মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকরা রোগীকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় যে, অপারেশনের সময় চিকিৎসকরা রোগীর জরায়ু কেটে ফেলেছেন, যার ফলে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ ও সংক্রমণ (ইনফেকশন) হয়। এই সংক্রমণের কারণেই প্রসূতির পেটে তীব্র ব্যথা হচ্ছিল। সিজারের ২৯ দিনের মাথায়, চলতি মাসের ১৪ আগস্ট, প্রসূতি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর।
প্রসূতির স্বজনরা সরাসরি শাহরাস্তি পপুলার হাসপাতালের চিকিৎসকদের দায়ী করেছেন এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালের অবহেলা ও চিকিৎসকদের অদক্ষতার কারণে তাদের প্রিয়জনকে হারাতে হয়েছে। ক্ষুব্ধ পরিবারটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
শাহরাস্তি পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাদের কেই এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।